ত্রিপুরায়-শিক্ষিকার-পোড়া-দেহ ঘটনায় প্রচুর বিক্ষোভ। শাসক বিজেপি বলছে, রসদ জোটাচ্ছেন কেউ কেউ।

মোহনপুরে এক স্কুল শিক্ষিকার পোড়া দেহ পাওয়া গেছে খোলা মাঠে ১৩ মার্চ।

আগেরদিন বিকালে বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি মেয়ে।
বাড়ি থেকে সিধাই থানায় অভিযোগ করা হয়েছে, ধর্ষণ এবং খুনের।

গতকালই দু-একটি সংগঠন আগরতলার রাস্তায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে। দেয়া হয়েছে ত্রিপুরা পুলিশের হেড কোয়াটারে ডেপুটেশনও।
১৪ মার্চ সকাল থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, বিধায়ক এবং অন্যান্য সংগঠনের লোকজন ওই বাড়িতে যেতে শুরু করেন। আক্রান্ত পরিবারটির সঙ্গে কথা বলতে যান তারা।

বিরোধী ভারতের জাতীয় কংগ্রেস অভিযোগ করেছে শাসক বিজেপি’র লোকজন বাধা দিচ্ছেন কথা বলতে।
সকালে সবার আগে যান কংগ্রেস নেতা সুবল ভৌমিক। তাকে বাধা দেয়া হয়। তার সঙ্গে থাকা সাংবাদিকদেরও বাধা দেয়া হয়। সাংবাদিক জাকির হুসেন তাকে মারার অভিযোগ করেছেন। পরে আগরতলায় এসে তাকে বাধা দেয়ার, সাংবাদিককে মারার অভিযোগ করেছেন সুবল।

দুপুরে গিয়েছিলেন মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বর্ণালী গোস্বামী। তিনি বলেছেন, তার সন্দেহ, এটি খুন, আত্মহত্যা নয়। অপরাধীরা যেন শাস্তি হয়, তার জন্য মহিলা কমিসন শেষ পর্যন্ত দেখবে।

মোহনপুরে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছিলেন কংগ্রেস নেতা এবং প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল রায়ও। আগরতলায় ফিরে তার জিজ্ঞাসা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং এলাকার মন্ত্রী কোথায়? জীবন্ত জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে মেয়েকে এই ঘটনা আগে কোনও দিন ত্রিপুরা দেখেনি। ‘অ্যায়সে নেহি চলেগা বিপ্লবজী’, মন্তব্য গোপাল রায়ের।

বিজেপি বিধায়ক, প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মণ এবং বিজেপি বিধায়ক আশিস সাহা গিয়েছিলেন। সুদীপ রায় বর্মণের মতে, ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত। একজনের পক্ষে তা করা সম্ভব হয় নয়। ‘নিজের ওপর ঘৃণা হয়, এখনও এই সমাজে বেঁচে আছি’, বলেছেন তিনি।

সন্ধ্যায় আগরতলা শহরে বিক্ষোভ দেখিয়েছে, সারা ভারত নারী সমিতি, ছাত্র সংগঠন এআইডিএসও, আমরা বাঙালি।
ত্রিপুরায় প্রধান বিরোধদল সিপিআই(এম)-র নেত্রী রমা দাসের বক্তব্য, বিরোধীদের যেমন বাধা দেয়া হচ্ছে, তেমনি সাংবাদিকদের ওপরও আক্রমণ হয়েছে মোহনপুরে। তার প্রশ্ন, কেন এত ভয়!
গিয়েছিলেন আইনজীবীরাও। আইনজীবীদের পক্ষে ভাস্কর দেববর্মা বলেছেন, তাদেরও বাধা দেয়া হয়েছে সেখানে। সত্য বেড়িয়ে আসুক তা চায় না শাসক দল, তাই পরিবারটির সঙ্গে কাউকে কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না।

সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করেছে শাসক দল বিজেপি। মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য বলেছেন, ঘটনা নিন্দনীয়। আক্রান্ত মেয়েটি তাদের সমর্থক। প্রধান অভিযুক্ত বিরোধী দলের হয়ে কাজ করেছিল গত বিধানসভা নির্বাচনের সময়। কিছু নেতা এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রসদ সংগ্রহ করতে নেমেছে। তারা সমাজের ভালো করতে পারে না।

পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সৌরভ পাল নামে একই পাড়ার একজনকে আটক করেছিল। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নির্দিষ্ট অভিযোগ নেয়া হয়েছে শিক্ষিকার পরিবারের কাছ থেকে ১৪ মার্চ ।দুপুরে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। খুন, অপহরণ, গণ ধর্ষণ, ইত্যাদি নানা ধারায় মাম্লায়টি নেয়া হয়েছে।
ভিডিওঃ অভিজিৎ
আগরতলা, ত্রিপুরা

COMMENTS