বিদেশের ক্যান্সারের রোগী পথে পথে, একবার এখানে-একবার ওখানে। শেষ পর্যন্ত আগামীকাল ফিরছেন দেশে। মানবিকতায় উজ্জ্বল সাংবাদিকরা।

বিদেশের ক্যান্সারের রোগী পথে পথে,  একবার এখানে-একবার ওখানে। শেষ পর্যন্ত আগামীকাল ফিরছেন দেশে। মানবিকতায় উজ্জ্বল সাংবাদিকরা।Featured Video Play Icon

বাংলাদেশের দম্পতিকে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। আগামীকালই তাদের সে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হতে পারে। জানিয়েছেন ত্রিপুরার স্বাস্থ্যসচীব ডাঃ দেবাশিস বসু।
মুখ্যসচীব মনোজ কুমার বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিয়েছেন। তাদের আগরতলার ভগতসিংযুব আবাসে রাখার ব্যবস্থা হচ্ছে। বলেছেন দেবাশিস বসু।
বাংলাদেশ থেকে ভারতে চিকিৎসা করা এসেছিলেন ইয়াকুব আলি এবং তার স্ত্রী শিরিন বেগম। কুমিল্লার ইয়াকুব আলি লিভার ক্যান্সার পেশেন্ট। চেন্নাইতে তার চিকিৎসা হয়। গতকাল চেন্নাই থেকে আগরতলায় ফেরেন। আগরতলা থেকেই বাংলাদেশে যাবার প্ল্যান ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকেই গোটা দেশে লকডাউন ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। রাত থেকেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল দেশের ভেতরের সমস্ত বিমান পরিষেবা। তার উপর বন্ধ আগরতলা-আখাউড়া সীমান্তও।
আটকা পড়েন বাংলাদেশের এই দম্পতি। রাতে কোন সহায় না পেয়ে এসে আশ্রয় নেন মেলারমাঠে। হোটেলে জায়গা হচ্ছিল না। খোলা আকাশতলে মেলারমাঠে পুকুর পাড়ে বসেছিলেন।
খবর পেয়ে ছুটে যান আগরতলার সাংবাদিকরা। তাদের চেষ্টাতেই খবর যায় পুলিশে, স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে। খবর দেয়া হয়েছিল আগরতলায় থাকা বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনেও। কিন্তু রাত হয়েছে বলে অনেকেই পাশ কাটিয়ে যাবার চেষ্টা করেন।
একবার পুলিশ এসে ঘুরেও যায়। তারপরেও অনেকক্ষণ কেটে যায়। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয় তারা হোটেল খুঁজতে যাচ্ছেন। পরে এসে জানায় হোটেল পাওয়া যায় নি।
নাছোড়বান্দা সাংবাদিকরাও। তারা ফের পুলিশে খবর দেন। রাতে এসে পুলিশ তাদের নিয়ে যায় মেলারমাঠের হজ ভবনে। সেখানে তাদের ব্যাগপত্র নামিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় আইজিএম হস্পিটালে। সেখানে তাদের টেস্টের পর হজ ভবনে রাখা হবে।
শেষ পর্যন্ত তাদের জায়গা হয়েছিল হ্জ ভবনে। যেখানে তারা ছিলেন , তার সামান্য দূরেই।
ডেইলি দেশের পত্রিকা অফিস থেকে খাবার, জল দেয়া হয়েছিল গতকাল রাতে। পাড়া-পড়শিরাও এটা-সেটা দিয়ে সাহায্য করেছেন।
আজ সকালে আবার হজ ভবন থেকে তাদের বলা হয় সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরে যেতে। এসেও পড়েন তারা আখাউড়া সীমান্তে। কিন্তু তাদের জানা ছিল না যে সীমান্ত বন্ধ। কোন উপায় না দেখে বসে পড়েন সীমান্ত এলাকার একটি দোকানের বারান্দায়। রাতে যে সাংবাদিকরা সাহায্য করেছিলেন তাদের আবার ফোন করেন। আবার ছুটে যান সাংবাদিকরা। বিভিন্ন জায়গায় ফোন করেন তারা।
আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় বসে ঐ দম্পতির শুধুই একটি কাতর আবেদন ছিল ‘যেভাবে হোক দেশে ফিরতে চাই’।
একটা সময় সাংবাদিকরা তাদের নিয়ে আসেন আইজিএম হস্পিটালের সামনে। পরে খবর যায় প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছেও। রাতে তাদের থাকার ব্যবস্থা হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। কাল তাদের দেশে পাঠানোর বন্দোবস্ত হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসচীব।

COMMENTS