যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর স্তরে পাঠরত পোল্যান্ডের এক ছাত্রকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি ভারত বিরোধী কাজে যুক্ত।
এই ছাত্রের নাম কামিল সিয়েডেসিনস্কি।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্য নিয়ে তিনি এম এ পড়ছেন । সরকারি নির্দেশে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত বেশ কয়েক বছর আগে ভারতে এসেছিলেন কামিল । তিনি বাংলা সাহিত্যের স্নাতক। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে অনার্স নিয়ে স্নাতক হন। এরপরই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন ।
পোল্যান্ডের বেশকিছু রূপকথা , শিশুদের জন্য কামিল বাংলায় অনুবাদ করেছেন।
খুবই দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছেন কামিল। বাংলা ভাষার প্রতি বিশেষ অনুরাগই তাকে ভারতে টেনে এনেছে।
বাংলা ভাষা নিয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণই তার ভারতে আসার মূল উদ্দেশ্য । এই অভিমত বিশ্ববিদ্যালয়ে তার শিক্ষকদের। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় তার আর্থিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ করে দিয়েছে ।
গত ২১ শে মার্চ কলকাতায় সি এ এ বিরোধী আন্দোলন কর্মসূচিতে তিনি গিয়েছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে একজন বিদেশী হয়ে সি এ এ বিরোধী আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়াকেই কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ভারত বিরোধী আচরণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
ভারত ছাড়ার নির্দেশ পাওয়ার পর কামিল আঞ্চলিক বৈদেশিক পঞ্জীয়ন কার্যালয়ে এই নির্দেশ বিবেচনার জন্য আবেদন করেন। পঞ্জীয়ন কার্যালয় কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের একটি সংস্থা। কামিল তার আবেদনে বলেন যে তিনি কোন ধরনের ছাত্র সংগঠন বা সি এ এ বিরোধী কার্যকলাপের সাথে যুক্ত নন। একান্তই কৌতুহলবশে তিনি সেই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন। কিছু ছবি তুলেছিলেন। পঞ্জীয়ন কার্যালয় থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে দিল্লি থেকে এই সিদ্ধান্ত এসেছে কাজেই তাদের কিছু করার নেই ।
জানা গেছে কামিল আইনি আশ্রয় নিতে যাচ্ছেন।
মাত্র দুদিন আগেই পশ্চিমবঙ্গের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত বাংলাদেশের ছাত্রী আফসারা অনিকা মিমকেও ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল একই। ভারত-বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত থাকা। মিম বিশ্ব ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সি এ এ বিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচির ছবি তুলে নিজের ফেইসবুক একাউন্টে পোস্ট করেছিলেন।
কামিল এবং মিম দুজনের ক্ষেত্রেই ভারত বিরোধী কাজে লিপ্ত থাকার জন্য ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও , নোটিশে বিস্তারিত ভাবে উল্লেখ করা হয় নি ঠিক কী ধরনের ভারত বিরোধী কাজে তারা যুক্ত।
সাম্প্রতিক সময়ে কামিলকে নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট চারজন বিদেশীকে ভারত ছেড়ে চলে যাবার জন্য নির্দেশ দিলো কেন্দ্রীয় সরকার ।
মাত্র কয়েক মাস আগে জার্মান ছাত্র জ্যাকব সি এ এ বিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার জন্য ভারত ছাড়ার নির্দেশ পেয়েছিলেন। জার্মান পর্যটক জে এম জোহানসনকেও একই অভিযোগে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
COMMENTS