ফেনী নদীর চরে খোলা আকাশের নীচে  কুড়ি দিন থাকার পর তিনি ‘উদ্ধার’ হয়েছেন

ফেনী নদীর চরে খোলা আকাশের নীচে  কুড়ি দিন থাকার পর তিনি ‘উদ্ধার’ হয়েছেন

ফেনী নদীর চরে খোলা আকাশের নীচে  কুড়ি দিন থাকার পর তিনি ‘উদ্ধার’ হয়েছেন।

পরিচয় পাওয়া গেছে, বাংলাদেশের কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দইখাওয়ারচর গ্রামের হাতেম আলী শেখ ও ওমেলা খাতুনের মেয়ে, শাহনাজ পারভিন। বছর দুই আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন।

ত্রিপুরার সাব্রুম ও বাংলাদেশের রামগড়ের মাঝে ফেনী নদীর একটি ছোট্ট চরে ২ এপ্রিল রাত থেকে শাহনাজ  ছিলেন। নদীর দুই পাড়েই মানুষ থাকেন, তার পরিচয় পাওয়া যাচ্ছিল না, তাই তিনি কোনও দিকেই ছিলেন না।

সাব্রুমের সাধারণ মানুষ কেউ কেউ  বলেছেন, তাদের মনে হয়েছে, তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। কথা গুছিয়ে বলছিলেন না।

ভারতের সীমান্ত রক্ষী বিএসএফ , কিংবা বর্ডার গার্ডস অব বাংলাদেশ, কেউই তাকে নিজেদের দিকে

আসতে দিতে , বা নিয়ে আসতে রাজি ছিলেন না।

 

ত্রিপুরা পুলিশের সূত্র থেকে জানা গেছে, পরিচয় জানার পর বিজিবি তাকে চর থেকে নিয়ে গেছে।

 

বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমে, অন্তত তিনটি ওয়েবসাইটে  এই বিষয়ে একই টেক্সট ছাপা হয়েছে। তাতে শাহনাজের বড় ভাই ওমর আলী  বলেছেন, “দীর্ঘদিন থেকে নিখোঁজ ছিলেন তার বোন। হঠাৎ করে বিজিবি-আইসিআরসি ও রেড ক্রিসেন্টের লোকজন সঙ্গে যোগায়োগ করে ছবি-ভিডিও দেখালে আমরা নিশ্চিত হই।“

তিনি বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে গেছেন কিনা, সেই খবর পাওয়া যায়নি। রেড ক্রিসেন্টের  তাকে পৌঁছে দেয়ার কথা।

দুই দিকেই  বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছিল পরিচয় চেয়ে। যতদিন  না তার পরিচয় পাওয়া গেছে তাকে চরেই কাটাতে হয়েছে।

বাংলাদেশের একটি সংবাদ মাধ্যম, বাংলা ট্রিবিউন  ১২ এপ্রিল  লিখেছিল,” বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন, খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সুইচিংথুই মারমা বলেন, ‘ভারসাম্যহীন নারীটি কোন দেশের সেটা বড় কথা নয়, তিনি একজন মানুষ। তার মানবাধিকার আছে। মানবাধিকার আইন অনুযায়ী তিনি ফেনী নদীর চরে আটকা থাকতে পারেন না। বর্ষা মৌসুম আগত, যেকোনও মুহূর্তে ঝড়-বাদল হতে পারে। পাহাড়ি ঢলে মারা যেতে পারেন তিনি।’ অবিলম্বে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের সভাপতি সুদর্শন দত্ত বলেন, ‘১২ দিন ধরে নদীর মাঝখানের নোম্যানস ল্যান্ডে কোনও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ছাড়া নারীর অবস্থান সত্যিই অমানবিক। তিনি দিনের রোদে পুড়ছেন, বৃষ্টিতে ভিজছেন।’ দ্রুত ওই নারীর পরিচয় নিশ্চিতের দাবি জানানোর পাশাপাশি তার পুনর্বাসন দাবি করেন তিনি।

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, খাগড়াছড়ি ইউনিটের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি সত্যিই অমানবিক। ঠিকানা বলতে না পারার কারণে নিজ দেশে বা বাড়িতে ফিরতে না পারা বা অমানবিক অবস্থায় নোম্যানস ল্যান্ডে অবস্থান করা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।

 

আগের খবরঃ  যেদিন মানুষ জঙ্গুলে ছিল , সেদিন এমন ‘সীমানা’ ছিল না। জিরো-লাইন ধারনাটাই ছিল না। সেদিনও কি মানুষ এমনই আরেকজন মানুষকে ফেলে রাখত নদীর চরে , একা ! ডেডলকড !

 

( আগরতলা,ত্রিপুরা )

COMMENTS