শাহিনবাগে গুলি :‘হামারি দেশ মে ঔর কিসি কো নেহি চলেগি’

গত তিন দিনে দুইবার দেশের রাজধানী দিল্লীর বুকে সি এ এ বিরোধী আন্দোলনকারীদের লক্ষ করে গুলি চালনার ঘটনা ঘটলো । আজ বিকাল চারটা বেজে তিপান্ন মিনিটে দিল্লীর শাহিনবাগে এক যুবক গুলি চালায় । কোনও হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও এই গুলি চালনার লক্ষ ছিল সি এ এ বিরোধী আন্দোলনকারীরাই । শাহিনবাগে গত বেশ কিছুদিন ধরেই এক বিশাল সংখ্যক মানুষ কেন্দ্রীয় সরকারের সি এ এ এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে যাচ্ছেন । এদিকে দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচনের দামামাও বেজে উঠেছে। গত ২৭ শে জানুয়ারি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর এক বি জে পি প্রার্থীর সমর্থনে আয়োজিত জনসভায় আওয়াজ তুলেছিলেন ‘দেশ কি গদ্দারো কো গোলি মারো শালো কো’ । দেশের নির্বাচন কমিশন শ্রী ঠাকুরের এই বক্তব্যকে নিন্দা জানিয়ে শ্রী ঠাকুরের ওপর বাহাত্তর ঘণ্টার জন্য নির্বাচনী প্রচারকার্যে অংশ গ্রহনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারী করে । সেই ঘটনার মাত্র তিনদিন পরেই গোপাল নামে সতের বছরের এক কিশোর জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সি এ এ বিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্র ছাত্রীদের লক্ষ করে গুলি চালায় । আহত হন একজন ছাত্র । আজও সি এ এ বিরোধী অন্যতম আন্দোলন স্থল , শাহিনবাগে এক যুবক বিকেলবেলা এসে গুলি চালায় ।দিল্লী পুলিশের ভাষ্য মতে সেই যুবক শুন্যে গুলি চালিয়েছিল এবং তারা সেই যুবককে সাথে সাথেই গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয় । বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে যে আন্দোলনকারীরাই সেই যুবককে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় এবং পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে । পুলিশের গাড়িতে তোলার আগে সেই যুবককে যখন প্রশ্ন করা হয় কেন সে গুলি চালিয়েছে , যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসের সাথেই সে জানায় যে , ‘হামারি দেশ মে ঔর কিসি কো নেহি চলেগি স্রেফ হিন্দুও কি চলেগি’ ( আমাদের দেশে আর কেউ থাকবে না কেবলমাত্র হিন্দুরাই থাকবে )। পুলিশ ব্যারিকেডের খুব সামনে দাঁড়িয়েই সেই যুবক গুলি চালায় বলে বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে। সেই যুবক ‘জয় শ্রী রাম’ শ্লোগান দেবার পর গুলি চালায় । প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে যে একটি অটো করে সে শাহিনবাগ এলাকায় গুলি চালানোর কিছুক্ষণ আগে উপস্থিত হয় । প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে দুই থেকে তিনবার গুলি চালায় সে । সংবাদ সংস্থা আই এ এন এস শাহিন বাগে উপস্থিত একজন পুলিশ আধিকারিককে উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে শূন্যে মোট তিন রাউন্ড গুলি চালিয়েছিল সেই যুবক । তার সাথে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রটি ছিল সেমি অটোমেটিক । প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে দুই তিন বার গুলি চালানোর পর পিস্তলটি জ্যাম হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে সে পালিয়ে যেতে সচেষ্ট হয় । গত ৩০ জানুয়ারির ঘটনার ক্ষেত্রেও সতের বছরের গোপাল নামের সেই ছেলেটি পুলিশের উপস্থিতিতেই গুলি চালাতে সমর্থ হয়েছিল । আজকের ঘটনাও মৌলিক ভাবে একই রকম । দিল্লী পুলিশের উপস্থিতিতেই এই ঘটনা ঘটল ।

COMMENTS