আপনাকে বাঁচিয়ে রাখতে জীবন তুচ্ছ করেছেন তারা

 

সাফাই কর্মী !

যত নোংরা-আবর্জনা, কী নেই তাতে, সব হাতে তুলে পরিস্কার করে অন্যদের জীবন মসৃন রাখছেন প্রতিদিন। কুকুরে ঘাঁটছে যে বাক্স,লালায় র‍্যাবিস , কে জানে কী আছে,  সেটাও পরিস্কার করছেন। বাড়ি বাড়ি থেকে বয়ে নিচ্ছেন সব ফেলে দেয়া জিনিস। অনেকেই সেটা গুছিয়ে ফেলছেন না, ঢেলে দিচ্ছেন ড্রেনে, রাস্তায়। পচা খাবার  থেকে ন্যাপকিন, সবটাই তাদের হাত ধরে পরিস্কার হয়ে যায়। ইচ্ছে করলেই প্যাকেট করে নির্দিষ্ট জায়গায় রাখা যায়, ‘সভ্য সমাজ’ সেদিকে মন দেয় না।

তাদের মুখে নেই এন-নায়েন্টিফাইভ মাস্ক। কোথায় ঢালা আছে বিষ, কেউ জানেন না। এই করে মাসে যা রোজগার তা দিয়ে অবশ্যই বিএমডব্লু গাড়ি চড়ার টাকা হয় না, হয় না সংসারের ঘোড়ায় নিশ্চিন্তে সওয়ার হওয়ার রসদও। টেনেই নিতে হয়। বাবু-বিবি বিলাসের পাশেই তারা থাকেন, বেঁচে থাকেন কিনা, তার জন্য গবেষণার দরকার নেই। মুখে কাপড় বেঁধে, গন্ধ চাপা দিয়ে কাজ করতে করতে বলছেন, দশজনের জন্য মরে গেলে, মরে যাব। এই কাজ করে যেতে হবে, অন্যদের রক্ষা করতে হবে।

না, তাদের শরীরে আর অন্যান্যদিনের মতই সাধারণ পোষাক। পিপিই ! সাফাইকর্মীদের জন্য ! ক্যামেরায় ধরা পড়েনি।

 

আফসোস একটাই, এত করে বলছি, শুনছেন না কেউ। আমাদের কাজটি করছি, কেউ শুনছেন না।ভয় তো আছেই, কিন্তু আমাদের দায়িত্ব এটাই। ‘খতরা’ আছে, তাই বলে যাচ্ছি । হাম ডিউটিবালে হে ভাই ! নিজের ঘরটি ছেড়ে বহুদূরে , রাস্তায় দাঁড়িয়ে ডিউটি করে যাচ্ছেন আরক্ষা কর্মী । না, তার মুখেও এন-নাইন্টিফাইভের দেখা নেই।

 

আমরা ভয় পেলে, রোগীরা কী করবেন ! আমাদের শরীরে এটি বাসা বাধলেও কিছু করার নেই, বলে দিতে হয় না, তিনি স্বাস্থ্যকর্মী ।

করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে সারা পৃথিবীতে ডাক্তার-স্বাস্থ্যকর্মী মারা যাচ্ছেন , শুধু ইতালিতেই ৬১ জন ডাক্তার মারা গেছেন আজ পর্যন্ত।

রিপোর্টিং-ক্যামেরাঃ অভিজিৎ ।

( আগরতলা, ত্রিপুরা)

COMMENTS