ভারত – ১৬৫ /৮ (২০ ওভার)
নিউজিল্যান্ড – ১৬৫/৭ (২০ ওভার)
সুপার ওভার – নিউজিল্যান্ড : ১৩ , ভারত : ১৬ (ভারত জয়ী) ।
বীরেন্দ্র সেহওয়াগ ট্যুইট করেছেন , এই ছেলেগুলো হাতের আঙুলের নোখ পছন্দ করে না। (“These guys don’t like Finger nails.Incredible)। তৃতীয় ম্যাচ যখন সুপার ওভারে চলে গিয়েছিল কে ভেবেছিল চতুর্থ টি টোয়েন্টিও একইরকম ভাবে সুপার ওভারেই নিষ্পত্তি হবে। জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের দরকার ছিল কুড়ি ওভারে ১৬৬ রান। ওভার প্রতি গড়ে দরকার ছিল ৮.৩ । ভারতের ব্যাটিং এ উল্লেখের মত শুধুমাত্র মনীশ পান্ডে , ৩৬ বলে ৫০ রান । সেরকম রান পান নি আর কেউই। বিশ্রামে রাখা হয়েছিল রোহিত শর্মা , রবীন্দ্র জাদেজা সহ মোহম্মদ সামিকেও । রোহিতের জায়গায় দলে আসা সঞ্জু স্যামসন ব্যাটে তেমন কোন প্রভাব তৈরি করতে পারেন নি । ওয়াশিংটন সুন্দর ব্যাট হাতে ব্যর্থ । ভারতের ইনিংস এক সময় ৮৮ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল । মনীশ পান্ডে দলের স্কোরকে একটি ভদ্রস্থ জায়গায় নিয়ে যান ।
গত ম্যাচে মোহাম্মদ সামি ম্যাচকে সুপার ওভারে নিয়ে গিয়েছিলেন । এই ম্যাচে শার্দুল ঠাকুর ছিলেন সামির ভূমিকায়। নিউজিল্যান্ডের শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল সাত রান । বুমরাহ গত ম্যাচে সেরকম প্রভাব তৈরি করতে পারেন নি তবে এই ম্যাচে নিজেকে অনেকটাই ফিরে পেয়েছেন । চার ওভারে কুড়ি রান দিয়ে নিয়েছেন একটি উইকেট । নিজের স্পেলের শেষ ওভারে নভদ্বীপ সাইনি দিয়েছেন মাত্র চার রান । এই সবকিছু নিয়েই খেলার শেষ পর্যায়ে নিউজিল্যান্ড কিছুটা চাপে পড়ে যায় । দলের নিয়মিত অধিনায়ক উইলিয়ামসনের অনুপস্থিতি ভীষণ ভাবেই প্রমাণিত হয়েছে । এর আগের ম্যাচে উইলিয়ামসন করেছিলেন ৯৫ রান এবং সুপার ওভারে ১১ রান ।
জয়ের জন্য দরকার ওভার প্রতি আটের একটু বেশী রান । ধীরেই শুরু হয় কিউই ইনিংস । পঞ্চম ওভারে গাপটিল আউট হয়ে ফিরে যান বুমরাহের বলে ব্যক্তিগত আট রানে । দলের স্কোর তখন ২২। অপর ওপেনার মুনরোর সাথে জুটি বাঁধেন সেইফার্ট। মুনরো যখন দ্বাদশ ওভারে রান আউট হলেন তখন দলের রান ৯৬ । এর পরের ওভারেই ব্রুসকে শূন্য রানে ফিরিয়ে দিলেন চাওহাল ।। নিউজিল্যান্ড ৯৭/৩ । মুনরোর সাথে জুটি বাঁধেন রস টেইলর। এই জুটিতে রান ওঠে ৬২ । শার্দুল ঠাকুরের বলে ব্যক্তিগত ২৪ রানে টেইলর যখন আউট হলেন তখন জয়ের জন্য দরকার মাত্র ৭ রান , কুড়িতম ওভারের খেলা চলছে। বল বাকি পাঁচটি। শেষ ওভারের তৃতীয় বলে আউট হলেন সেইফার্ট ব্যক্তিগত ৫৭ রানে , বল খেলেছিলেন ৩৯ টি। চার রান করে ওভারের পঞ্চম বলে শিভম দুবের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হলেন মিশেল।খেলার শেষ বলে রান আউট হলেন সেন্টনার। রান করেছিলেন ২ । শেষ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল দুই রান । কুগেলজিন এক রানই নিতে পারলেন । এভাবেই ম্যাচ চলে যায় সুপার ওভারে । সামির বদলে খেলতে নামা সাইনি চার ওভারে রান দিয়েছেন ২৯ , কোন উইকেট পান নি । নিজের শেষ ওভারে মাত্র চার রান দিয়ে কিন্তু কিউই দের চাপে ফেলে দিয়েছিলেন সাইনি । অপর অলরাউন্ডার ওয়াশিংটন সুন্দর বল হাতে সফল হন নি । দুই ওভার হাত ঘুরিয়ে দিয়েছেন ২৪ রান । ব্যাট হাতেও শূন্য রানে আউট হয়েছেন ।
সুপার ওভারে ব্যাট করতে নামেন মুনরো এবং সেইফার্ট । বুমরার প্রথম বলেই হাঁকিয়েছিলেন সেইফার্ট । ব্যাটে বলে ঠিক মত সংযোগ হয় নি। মিড উইকেটে উড়ে গিয়েছিল বল । আয়ার ক্যাচ ধরার সুযোগ হারিয়েছিলেন । কিউইদের খাতায় যোগ হয়ে গিয়েছিল দুই রান। দ্বিতীয় বলে ডিপ এক্সট্রা কভার দিয়ে চার মারলেন সেইফার্ট।তৃতীয় বলে আবার ক্যাচ মিস। এবার রাহুল। মাঝখান থেকে চলে এল দুই রান। তিন বলে দুইবার ক্যাচ মিস । চতুর্থ বলে আবার উঁচু করে তুলে দিয়েছিলেন সেইফার্ট। সুন্দর ডিপ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে কোন ভুল করেন নি। নিউজিল্যান্ড ৮/১ , বাকি আছে দুই বল। পয়েন্টের মাঝ বরাবর মুনরোর ব্যাট ছুঁয়েই বল চলে গিয়েছিল সীমানার বাইরে । চার রান।শেষ বলে মুনরো নিলেন একটি খুচরো রান । জয়ের জন্য ভারতকে এক ওভারে করতে হবে ১৪ রান।
অধিনায়ক বিরাট এই পর্যায়ে কে এল রাহুলের সাথে নিজেই এলেন ব্যাট করতে। ঐদিকে সাউদি প্রস্তুত বল হাতে ।প্রথম বলেই ছয়। কে এল রাহুল মনে হয় তৈরি ছিলেন এরকম কিছু ঘটানোর জন্য । জয়ের জন্য ৫ বলে দরকার ৮ রান ।দ্বিতীয় বলে আবার রাহুলের ধ্রুপদী হুক। এবার চার রান । সাউদি মনে হয় ভাবছিলেন কোথায় বল রাখা যায় । জয়ের জন্য ৪ বলে দরকার ৪ রান। নিজেকে সামলাতে পারলেন না রাহুল তৃতীয় বলে। ডিপ স্কোয়ার লেগ দিয়ে উড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন সাউদিকে । পারলেন না । ধরা পড়লেন কুগেলজিনের হাতে। জয়ের জন্য ৪ রান দরকার ৩ বলে। চতুর্থ বল মিড অনে ঠেলে দিয়েই বিরাট নিয়ে নিলেন দুই রান। পঞ্চম বলে এল চার। দরকার ছিল দুই রানের। ব্যাট হাতে যখন বিরাট , ফিনিশিং তো স্টাইলেই হতে হবে। বিরাটের ব্যাট ছুঁইয়েই বল আছড়ে পড়েছিল বাউন্ডারির বাইরে। সিরিজ জয় আগেই হয়েছিল , চতুর্থ টি টোয়েন্টি জিতে ভারত এখন হোয়াইট ওয়াশের অপেক্ষায়।ম্যাচের সেরা হয়েছেন শার্দুল ঠাকুর।
COMMENTS